কৈবর্ত বিদ্রোহ

পাল সম্রাট দ্বিতীয় মহিপাল 1070-1071 খ্রিস্টাব্দে পাল সিংহাসনে বসেন। তিনি ছিলেন একজন কুশাসক। তাঁর কুশাসনে বরেন্দ্রভূমিতে অশান্তি দেখা যায়। এর ফলে সামন্ত শ্রেণীর বিদ্রোহ করে। সেই বিদ্রোহের নায়ক ছিলেন কৈবর্ত জাতি সামন্ত দিব্য। তিনি যুদ্ধে মহিপালকে নিহত করে বরেন্দ্রভূমি সিংহাসন আহরণ করেন এবং তিনি পাল সাম্রাজ্যের পতন ঘটান।

কৈবর্ত-বিদ্রোহ
বিদ্রোহ



কৈবর্ত বিদ্রোহের চরিত্র

শ্রেণী বিদ্রোহ 

কৈবর্তরা হচ্ছেন  কৃষিজীবী সম্প্রদায়। এদের জাতি হচ্ছে মাহিয্য। পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, রামশরণ শর্মা ও বি. এন. এস যাদবের চিন্তাভাবনা হচ্ছে, কৈবর্তরা ছিলেন মূল কৃষক শ্রেণী। কৈবর্তদের দুটি সম্প্রদায় যথা- জালিয়া এবং চাষি, এরাই বিদ্রোহ করেছিল।


কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবীদের বিদ্রোহ

ঐতিহাসিক বিনয়চন্দ্র সেন বলেন, কৈবর্তরা ছিলেন মৎস্যজীবী‌। সর্বসময়ে কৃষক ও আংশিক মৎস্যজীবীরা বিদ্রোহ করেছিল। আবার অধ্যাপক নীহাররঞ্জন রায় কৈবর্তদের মৎস্যজীবী বলে শনাক্ত করেছিল। 1950 খ্রিস্টাব্দে এর সম্পর্কে লেখক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, নীহাররঞ্জন রায়ের স্বপক্ষে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং নানা লেখক এর বিরুদ্ধে তাদের নিজস্ব মত প্রকাশ করেছিলেন।


সামন্তদের রাজ্য স্থাপনের জন্য বিদ্রোহ

ঐতিহাসিক এ. কে. মিত্র বলেন, দিব্য একজন ছিলেন সামন্ত প্রভু। রামচরিতে উল্লেখ্য আছে যে, সামন্তরা একটা জোট স্থাপন করে এবং একসঙ্গে দ্বিতীয় মহিপালকে আক্রমণ করেন।


কৃষকদের গণবিদ্রোহ বিদ্রোহ

ঐতিহাসিক রামস্মরণ শর্মা ও বি. এন. এস যাদব বলেন এটি একটি গণবিদ্রোহ। প্রথম মহীপালের সময় কৈবর্তদের 210টি ভূখণ্ড দান করা হয়েছিল এবং দিপের লোকেরা কিছু কিছু শর্তে জমি পেয়েছিল। তারা পাল শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং তারা ছিলেন কায়স্থ। এখন তারা ভাগচাষী হিসাবে কাজ করে। মনে করা হয় যে, তারা সামরিক সেবা করতে ব্যর্থ হলে পালরা তাদের কাছ থেকে জমি কেড়ে নেয়। সম্প্রদায়ের এই অসন্তোষ এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল যে শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় মহিপালকে নিহত হতে হয়েছিল।


একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রশাসকের ক্ষমতা দখল

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার খুব সঠিকভাবে কথা বলেছেন যে, দিব্য জাতিতে ছিলেন কৈবর্ত। দিব্য কোন মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে জনসাধারণকে রক্ষা করতে এসেছিলেন- একথা রমেশচন্দ্র মজুমদার মনে করেন।আবার কৈবর্ত বিদ্রোহকে গণবিদ্রোহ এবং সশস্ত্র আন্দোলন বলা যায় না, কারণ রাজকর্মচারীর সুযোগ পেলে রাজা হতে চাইতো।


কৈবর্ত বিদ্রোহের ইতিহাস জানার উপাদান গুলি

কৈবর্ত বিদ্রোহের ইতিহাস জানার জন্য বড় উৎস হচ্ছে সন্ধ্যাকর নন্দীর লেখার রামচরিত। এতে তার বিস্তারিত বিবরণ আছে। এটিকে প্রধান উপাদান হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু সন্ধ্যাকর নন্দী রচনা পাল বংশের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে করা হয়। কারণ তিনি রামপালের সভাকবি ছিলেন। এছাড়াও কুমার পালের মন্ত্রী বুদ্ধদেবের কামাউলিপট্ট, মদন পালের মানাহালিপট্ট প্রভৃতি থেকে কৈবর্ত বিদ্রোহের কথা এবং তার সঠিক ইতিহাস জানা যায়।



তথ্যসূত্র

  1. সুনীল চট্টোপাধ্যায় "প্রাচীন ভারতের ইতিহাস"
  2. David Gordon White, "Tantra in Practice".
  3. Upinder Singh, "A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century".

সম্পর্কিত বিষয়

  1. নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় টীকা (আরো পড়ুন)
  2. বৈদিক এবং ঋক বৈদিক যুগে প্রশাসনিক ব্যবস্থা (আরো পড়ুন)
  3. প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য  (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
                     .......................................


    নবীনতর পূর্বতন
    👉 আমাদের WhatsApp Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
        
      
      👉 আমাদের WhatsApp Channel- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
    
        👉 আমাদের Facebook Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
      
      
        👉 আমাদের Facebook Page-ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
    
        👉আমাদের YouTube চ্যানেল - সাবস্ক্রাইব করুন 👍 
    
    
    
    
        
      
    
      
    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য

    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য


     


     




    
    

    👉নীচের ভিডিওটি ক্লিক করে জেনে নিন আমাদের ওয়েবসাইটের ইতিহাস এবং বিভিন্ন চাকুরী সম্পর্কিত পরিসেবাগুলি 📽️

    
    
    

    👉 জেনে আপনি আমাদের প্রয়োজনীয় পরিসেবা 📖

    👉ক্লিক করুন 🌐