দীন-ই-ইলাহি

মধ্যযুগে মুসলিম শাসকদের মধ্যে ধর্মীয় গোঁড়ামি ঊর্ধ্বে যিনি সর্বাপেক্ষা খ্যাতি ছড়িয়ে ছিলেন, তিনি হলেন মহারতি আকবর|

তার ধর্মীয় উদারতার পিছনে তার পূর্বপুরুষ তৈমুর বংশে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি বিশেষভাবে কার্যকর ছিল| আকবরের পিতা ও পিতামহ ছিলেন সব রকম ধর্মীয় গোঁড়ামির ঊর্ধ্বে|

দীন-ই-ইলাহি

                    মুঘল সাম্রাজ্যের মানচিত্র

                Author- Santosh.mbahrm
               Date- 26 September 2015
             Source- wikipedia (check here)
 License- GNU Free Documentation License

                   


আকবরের ধর্মীয় নীতির শেষ পর্যায় হলো "দীন-ই-ইলাহি" নামে এক নতুন ধর্ম| 1582 খ্রিস্টাব্দে তিনি এই ধর্মটি প্রবর্তিত করেন| সাধারণত সকল ধর্মের সারবস্তুকে নিয়ে আকবরের এই নতুন ধর্ম গড়ে উঠে ছিল| তার এই নতুন ধর্ম নীতিতে কোন পুরোহিত, কোন নবী কিংবা কোন ধর্মগ্রন্থের অস্তিত্ব ছিল না| আত্মার সাথে পরমাত্মার মিলন- এই ধরনের একটা কল্পনা এখানে স্থান পেয়েছিল|

আকবর তার এই নতুন ধর্মমতে সকল ধর্মের দর্শন স্থান পেয়েছিল| দীন-ই-ইলাহি গ্রহণের পদ্ধতি ছিল খুবই সাধারণ| সম্রাটের অনুমতি ছিলো ইলাহি সম্প্রদায়ভুক্ত হবার একমাত্র পথ|


দীন-ই-ইলাহি


এই সম্প্রদায়ের কিছু পালনীয় কর্তব্য ছিল, যেমন- উদারতা, আত্মত্যাগ, মহানুভবতা, পার্থিব কামনা থেকে মুক্তি ও সৎকাজের ইচ্ছা ইত্যাদি|

কিছু সামাজিক কর্তব্যের বিধানও আকবর দিয়েছিলেন, যেমন- বহুবিবাহ নিষেধ, বিধবা বিবাহের প্রচলন, শিশু বিবাহের নিষেধ, জুয়া খেলা ও মদ্যপান নিষেধ প্রভৃতি| এছাড়াও ইলাহি ধর্মানুরাগীদের প্রত্যহ সূর্যোদয় কালে, মধ্যাহ্ন এবং সূর্যাস্তের সময় প্রার্থনা করার নির্দেশ ছিল|

এই ধর্মমতের মূল কথা ছিল- নিরামিষ ভোজন,দান ধর্ম পালন করা, পরস্পরকে আল্লাহু আকবর বলে সম্বোধন করা এবং সম্রাটের জন্য সর্ব ত্যাগী শপথ গ্রহণ করা| তবে এই ধর্মমতের বিশেষ দিক হলো, আকবর কখনো কাউকে এই ধর্ম জোর দিয়ে গ্রহণ করাননি|

ঐতিহাসিক বদাউনি(আরো পড়ুন) বলেছেন যে, দীন-ই-ইলাহি প্রবর্তন করে আকবর বহু ইসলাম বিরোধী অনুশাসন প্রচার করেছিলেন, যেমন- মুসলিমদের সপ্তাহিক সাধারণ প্রার্থনা, রমজান মাসের উপহার, নতুন মসজিদ তৈরি নিষিদ্ধ ও মক্কায় তীর্থযাত্রা নিষেধ প্রভৃতি কথা তার এই নতুন ধর্মমতে প্রতিফলিত হয়েছে|

তবে দ্বীন-ই-ইলাহি সম্পর্কে বিরূপ সমালোচনা করা হলেও তার সঙ্গে একথাও ঠিক যে, এই ধর্ম প্রচারের ফলে,
  1. জনসাধারণ সম্রাটকে সম্পূর্ণ ভারতীয় ও প্রজাহিতৈষী বলে গ্রহণ করেছিলেন| 
  2. বিভিন্ন ধর্মালম্বীরা পরস্পরের কাছে এসেছিলেন এবং এই ধর্মমতের ফলে তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে| 
  3. উলেমাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি নষ্ট হয় এবং সম্রাটের কাছ থেকে নিরপেক্ষতা নীতি ঘোষণা করা হয়|
পরিশেষে এই ধর্মের বিশেষ এবং উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, আকবর কোনদিন কাউকে জোর করে এই ধর্ম গ্রহণ করাননি|



তথ্যসূত্র

  1. সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"
  2. শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "অষ্টাদশ শতকের মুঘল সংকট ও আধুনিক ইতিহাস চিন্তা"
  3. অনিরুদ্ধ রায়, "মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস"

    সম্পর্কিত বিষয়

    সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
                  ......................................................

    নবীনতর পূর্বতন
    👉 আমাদের WhatsApp Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
        
      
      👉 আমাদের WhatsApp Channel- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
    
        👉 আমাদের Facebook Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
      
      
        👉 আমাদের Facebook Page-ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
    
        👉আমাদের YouTube চ্যানেল - সাবস্ক্রাইব করুন 👍 
    
    
    
    
        
      
    
      
    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য

    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য


     


     




    
    

    👉নীচের ভিডিওটি ক্লিক করে জেনে নিন আমাদের ওয়েবসাইটের ইতিহাস এবং বিভিন্ন চাকুরী সম্পর্কিত পরিসেবাগুলি 📽️

    
    
    

    👉 জেনে আপনি আমাদের প্রয়োজনীয় পরিসেবা 📖

    👉ক্লিক করুন 🌐