আধুনিক ইতিহাসের লিখন পদ্ধতি আলোচনা করো

জ্ঞানের অন্যান্য শাখার মতো ইতিহাসেরও নিজস্ব লিখন পদ্ধতি রয়েছে। সাধারণভাবে বলা যায় সাক্ষ্য বা প্রামান্য তথ্যের বিচার-বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যার দ্বারাই ঐতিহাসিকগণ ইতিহাস রচনা করে থাকেন। আমাদের চারদিকের নানা ঐতিহাসিক উৎস ও তথ্যের সাহায্যে বিজ্ঞানসম্মতভাবে বেশ কিছু নিয়ম নীতি মেনে ঐতিহাসিক গণ ইতিহাস রচনা করে থাকেন। এই প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক বিউরির বক্তব্য প্রনিধানযোগ্য। তাঁর পরিভাষায়—“ইতিহাস হল একটি বিজ্ঞান এ রকম কিছু নয়, বেশিও নয়"।

আধুনিক ইতিহাসের লিখন পদ্ধতি আলোচনা করো


আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতি

👉 উৎসের অনুসন্ধান

ইতিহাস লিখন পদ্ধতির ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপগুলো ঐতিহাসিক ঘটনার উৎসের অনুসন্ধান করা। ইতিহাস হল- উৎস ভিত্তিক উৎস ছাড়া ইতিহাস হয় না, আবার নানা ধরনের হয়ে থাকে, যথা -

  1. প্রত্নতাত্ত্বিক (জীবাশ্ব, হাড়গোড়, যন্ত্রপাতি, অস্ত্রশস্ত্র, স্মৃতিসৌধ-স্থাপত্য প্রভৃতি)।
  2. মৌখিক (ধর্মীয় বিশ্বাস, পৌরাণিক কাহিনি, আত্মকথন, রূপকথা, কিংবদন্তী প্রভৃতি)।
  3. ছবি ভিত্তিক (চিত্রকলা, নকশা, মানচিত্র প্রভৃতি)।
  4. লিখিত বিবরণমূলক (প্রাচীন পাণ্ডুলিপি, চুক্তি বা সন্ধিপত্র, সরকারি দলিল-দস্তাবেজ, সংবাদপত্র প্রভৃতি।

এই সমস্ত উৎসগুলি থেকে ঐতিহাসিক তার প্রয়োজনীয় উৎসের অনুসন্ধান করেন এবং সেগুলির ভিত্তিতে ইতিহাস রচনা করেন।


👉 উৎস থেকে তথ্য চয়ন 

উৎসের অনুসন্ধান শেষে ঐতিহাসিক তার প্রয়োজনীয় উৎসটি চিহ্নিত করেন। কোন তথ্য অতিপ্রয়োজনীয় কোনটা আবার মোটামুটি প্রয়োজনীয় আবার কোন তথ্য ঐতিহাসিক কাছে অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে, ঐতিহাসিককে এই প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী উৎস থেকে তথ্য করতে হবে।


👉 তথ্য যাচাই করণ

তথ্য সংগ্রহ করার পর সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে সেগুলি যাচাই করে থাকেন। এক্ষেত্রে ঐতিহাসিক দুটি কাজ করতে হয়। প্রথমটি হলো- কোন তথ্যের বাহ্যিক সমালোচনা, দ্বিতীয়টি হলো- তথ্যের অভ্যন্তরীণ সমালোচনা।


👉 ধারাবাহিকতা ও কালানুক্রম

ইতিহাস হলো মানবসভ্যতা ধারাবাহিক ক্রমবিবর্তনের বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণ । যথার্থ ইতিহাসকে ধারাবাহিক হতেই হবে। ইতিহাস রচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বর্ণনার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক নিশ্চয়ই সেই ঘটনার সময়কাল উল্লেখ করেন। কালানুক্রম অনুসারে ঐতিহাসিক ঘটনা গুলিকে সাধারণত তিন পর্ব ভাগ করে আলোচনা করেন। যথা -

  1. ঘটনার সূচনাপর্ব বা প্রাথমিক অবস্থা।
  2. ঘটনার গতিপ্রকৃতি বা মধ্যাবস্থা।
  3. ফরেনার পরিনতি বা অবস্থা।

বর্তমান বিশ্বে ঐতিহাসিকরা খ্রিস্টান কালক্রম অনুসারে ধারাবাহিকভাবে ঘটনা সাজিয়ে তার ইতিহাস রচনা করেন।


👉 ভৌগোলিক অবস্থানের উল্লেখ্য

ইতিহাসের সব ঘটনা কোন ক্ষুদ্র বৃহৎ সংস্থাটির সংগঠিত হয়ে থাকে। স্থান- কাল- পাত্র বিহীন ইতিহাস যথার্থ ইতিহাস নয়।


👉 তথ্য সংগ্রহ ও ইতিহাস রচনা

ঐতিহাসিককে তার ইতিহাস রচনা শুরু করার আগে প্রয়োজনীয় তথ্যের সংরক্ষণ করতে হয়। উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং সেগুলি সঠিকভাবে যাচাই করে নেবার পর ঐতিহাসিক যথাযথভাবে তথ্যগুলি সংগ্রহ করে প্রথমেই তার ব্যক্তিগত সংগ্রহে বা নোট বুকে লিখে রাখেন। ইতিহাস লেখার সময় প্রয়োজন অনুসারে এই তথ্যগুলি তিনি ব্যবহার করে থাকেন।


উপসংহার

আধুনিক ইতিহাসের লিখন পদ্ধতি দিনে দিনে বিবর্তিত

হচ্ছে।


তথ্যসূত্র

  1. শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "পলাশি থেকে পার্টিশন"
  2. Ishita Banerjee-Dube, "A History of Modern India".

লেখক পরিচিতি

অন্ধকূপ হত্যা বলতে কী বোঝো
নাম- সুমন মোহন্ত
কলেজের নাম- নেতাজি মহাবিদ্যালয়
(২ সেমিস্টার, ইতিহাস অনার্স)
ঠিকানা- আরামবাগ, মায়াপুর,
পিন কোড- ৭১২৪১৩

সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন।
                     .......................................

    নবীনতর পূর্বতন
    👉 আমাদের WhatsApp Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
        
      
      👉 আমাদের WhatsApp Channel- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
    
        👉 আমাদের Facebook Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
      
      
        👉 আমাদের Facebook Page-ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
    
        👉আমাদের YouTube চ্যানেল - সাবস্ক্রাইব করুন 👍 
    
    
    
    
        
      
    
      
    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য

    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য


     


     




    
    

    👉নীচের ভিডিওটি ক্লিক করে জেনে নিন আমাদের ওয়েবসাইটের ইতিহাস এবং বিভিন্ন চাকুরী সম্পর্কিত পরিসেবাগুলি 📽️

    
    
    

    👉 জেনে আপনি আমাদের প্রয়োজনীয় পরিসেবা 📖

    👉ক্লিক করুন 🌐