পলিস এর বৈশিষ্ট্য

পলিস একটি গ্রিক শব্দ, যা বাংলায় অর্থ হল নগর রাষ্ট্র। পলিশ বলতে বোঝায় প্রাচীন গ্রিসের দ্বশাসিত রাষ্ট্র সমিতি আয়তন আর অল্প সংখ্যক লোক সংখ্যার জন্য পলিশকে সিটি স্টেট বা নগর রাষ্ট্র বলা হয়।

অ্যারিস্টটলের তাঁর পলিটিক্স গ্রন্থে বলেছেন যে,- নির্দিষ্ট ভূখন্ডে পরিকল্পিতভাবে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য প্রতিরক্ষা রাজনৈতিক ক্রিয়া কলাপের জন্যও সৌন্দর্য বজায় থাকে।

আবার ঐতিহাসিক হেমন্ড বলেছেন, পলিশকে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে কেন্দ্রস্থল বলে ব্যাখ্যা করেছেন। বৃহত্তর অর্থে পলিশ বলতে বোঝায়, ছোট ছোট পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য রাষ্ট্রীয় আবাসভূমি, সেখানে রয়েছে প্রশাসন ব্যবস্থা প্রশাসনের প্রতি আনুগত্য, গ্রামীণ জীবনের স্পর্শ, সামাজিক শ্রেণীবিন্যাস, স্বাতন্ত্র্যের আমোধবোধ, খেলাধুলা শিল্প, সংস্কৃতি চর্চা, অর্থনৈতিক কার্যকলাপের স্বাধীনতা।

পলিস এর বৈশিষ্ট্য


📖পলিশের মূল বৈশিষ্ট্য

গ্রিসের রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলতে নগর রাষ্ট্র বা পালিশকে বোঝায় গ্রীকদের উৎসাহ আবেগ অনুভূতি সবকিছুই পলিশকে কেন্দ্র করেই প্রকাশিত হতো বিভিন্ন পেশাবৃত্তি ও  শ্রেনীর মানুষ পলিশের মধ্যে খুঁজে পেয়েছে। তাদের নিজের জগতকে এহেন পলিসের কয়েকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করা যেতে পারে,-

👉প্রথমত:- চরিত্রগতভাবে নগর হলেও পলিশের মধ্যে গ্রামীণ জীবনে স্পর্শ হলেও সানির পদ্ধতির নিয়ে র্বাকার বলেন যে, পলিশের মধ্যে there is after our of the barnyard about the comme dies off aristophans। প্রত্যেক পলিশেরই নিজস্ব গ্রাম ছিল জোন্স ব্রান্ট ও ক্সোয়ার লেখা থেকে জানা যায় যে, প্রত্যেকটি পলির শস্যের জন্য গ্রামের উপর নির্ভরশীল ছিল। প্রতিটি পলিশে কৃষি ক্ষেত্রে চারণ ক্ষেত্র কৃষিভিত্তিক জীবন বিভিন্ন ধরনের পেশা ফলের বাগান গ্রামীণ প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে, সুতরাং পলিশগুলি নগর রাষ্ট্র হলেও গ্রামীণ জীবন ছিল তার মূল ভিত্তি।


👉দ্বিতীয়তঃ- গ্রিক পলিশের দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল পলিশবাসীর ঐক্যবদ্ধ। ঐতিহাসিক বাকার বলেছেন- একই প্রাচীরের মধ্যে বসবাস পলিশবাসীকে পরস্পরের কাছে টেনে এনেছে বংশগত আর্থিক পুষ্টিগত কৌলিন্যের অবসান না ঘটলেও পলিশবাসীরা একে অন্যের সঙ্গে সহজেই মিশে যেত। বাজার, পথঘাট, সরকারি ব্যায়ামগার সর্বত্রই সবার অবাধ প্রবেশ আধিকার ছিল। সম্ভবত গ্রিক পলিশ জীবনে পরিবেশ ও ঐতিহ্য পলিশবাসীদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ করে দিয়েছিল।


👉তৃতীয়ত:- পলিসের তৃতীয় বৈশিষ্ট্য ও স্বয়ং সক্রিয়তা এবং স্বাধীনতা পলিশ শুধু সরকারি ব্যবস্থার রূপ হিসেবেই চিহ্নিত হয়নি। এটি ছিল একটি ছন্দের মতো শুধু রাজনৈতিক নয় সামাজিক দিক থেকেও পলিশ ছিল স্বয়ং সক্রিয়। মাঠে বাজারে অবাধ আলোচনা ও পরামর্শের সুযোগ ছিল, সেই সঙ্গে বাক্ স্বাধীনতাও পলিশ জীবনে বজায় ছিল।


👉চতুর্থত:- পরিষদ অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল- এর ক্ষুদ্র আয়তন, বৃহৎ রাষ্ট্র গ্রীকরা পছন্দ করত না বা তাতে স্বস্তিবোধ করত না। বৃহৎ পারস্য সাম্রাজ্যের কথা তারা জানতো এবং বিশাল আয়তন বিশিষ্ট ওই সাম্রাজ্যকে বর্বরদের বাসযোগ্য মনে করত। ভৌগলিক আয়তনের দিক থেকে পলিশ একটি আকারে বড় ছিল না। পলিশের ক্ষুদ্র আয়তনকে ভিক্টর এরেনবার্গ "স্থানের সংকীর্ণতা" বা Narrawass of space বলে আখ্যা দিয়েছেন।


👉পঞ্চমত:- পলিসের আরেকটি বৈশিষ্ট্য ছিল তার জনসংখ্যার স্বল্পতা। প্লেটো তাঁর রিপাবলিক গ্রন্থে বলেছেন- আদর্শ রাষ্ট্রের নাগরিক সংখ্যা হবে ৫ হাজার এবং আরো বলেছেন যে, পলিসের নাগরিকবাদের মধ্যে পরস্পর পরিচয় থাকা উচিত। পেলোপনেসীয় যুদ্ধের সময় অর্থাৎ খ্রিস্টপূর্ব ৪৩১ অব্দে এথেন্সের লোক সংখ্যা ছিল আড়াই লক্ষ থেকে 2 লক্ষ্য 75 হাজারের মতো। করিন্থের প্রায় ৯০ হাজার থিবস, আরগোস প্রভৃতির লোক সংখ্যা ছিল ৪০ থেকে ৬০ হাজারের মতো, (ঐতিহাসিক ফিনলের হিসেবে) কোন কোন পলিসি পাঁচ হাজারও তারও কম লোক সংখ্যা ছিল, সুতরাং স্বল্পসংখ্যক জনসংখ্যা নিয়েই পলিশ জীবন বিকশিত হয়েছিল।


👉ষষ্টত:- পলিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল গ্রীক স্বাজাত্যবোধ। দেশের বহু সংখ্যক পলিশের অস্তিত্ব ছিল এবং প্রতিটি পলিশ ছিল স্বশাসিত রাষ্ট্র। কিন্তু তা সত্বেও তাদের মধ্যে গ্রিক চেতনা সর্বদাই বজায় ছিল। সকলের মতে তারা গ্রীক জাতিভুক্ত তাই গ্রিক প্রশাসন, সরকারি ব্যবস্থা, গ্রিক সংস্কৃতি, গ্রিক উৎকর্ষ ও মহত্ত্ব সবকিছুই গড়ে উঠেছিল পলিশগুলির স্বাজাত্যবোধ ও সমবেত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে


👉সপ্তম:- গ্রিক পলিশ গুলিতে সামাজিক শ্রেণীবিন্যাস ও অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট ছিল তবু একটা ঐক্যবোধ ছিল। সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপনের তাগিদে জনবহুল রাষ্ট্রের ব্যাধিগুলি থেকে মুক্ত থেকে সীমিত সংখ্যক জনসংখ্যা নিয়ে পলিশগুলি বিকশিত হয়েছিল। ভৌগলিকভাবে ক্ষুদ্র হলেও পলিশের অধিবাসীরা সংকীর্ণ ছিল না। যৌথ ও সমবেত জীবনের মূল্য সম্পর্কে পলিশবাসী যথেষ্ট সচেতন ছিল।

............. সমাপ্তি...........


✍️লেখিকা পরিচিতি

নাম- জিয়াসমিন খাতুন
কলেজ - পাঁশকুরা বনমালী কলেজ
ইউনিভার্সিটি - বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি


👉তথ্যসূত্র

  1. Pavneet Singh, "International Relations ".
  2. Prakash Chandra, "international relations & comparative politics".
  3. Garrett W Brown, "The Concise Oxford Dictionary of Politics and International Relations ".

📜সম্পর্কিত বিষয়

  1. ওপেক কি ? | What is OPEC ? (আরো পড়ুন)
  2. সার্কের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য (আরো পড়ুন)
  3. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জার্মানির বিভাজন তথা বিশ্ব রাজনীতিতে তার প্রভাব  (আরো পড়ুন)
  4. ইতালিতে ফ্যাসিবাদের উত্থানের কারণ  (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন।
                     .......................................

    নবীনতর পূর্বতন
    👉 আমাদের WhatsApp Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
        
      
      👉 আমাদের WhatsApp Channel- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
    
        👉 আমাদের Facebook Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
      
      
        👉 আমাদের Facebook Page-ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
    
        👉আমাদের YouTube চ্যানেল - সাবস্ক্রাইব করুন 👍 
    
    
    
    
        
      
    
      
    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য

    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য


     


     




    
    

    👉নীচের ভিডিওটি ক্লিক করে জেনে নিন আমাদের ওয়েবসাইটের ইতিহাস এবং বিভিন্ন চাকুরী সম্পর্কিত পরিসেবাগুলি 📽️

    
    
    

    👉 জেনে আপনি আমাদের প্রয়োজনীয় পরিসেবা 📖

    👉ক্লিক করুন 🌐