বলবনের রাজত্ব তত্ত্ব

ইলবারি তুর্কি নেতা গিয়াসউদ্দিন বলবন ছিলেন সুলতানি শাসক ইলতুৎমিসের চল্লিশচক্রের অন্যতম সদস্য। চল্লিশচক্রের চকরে এই বর্ষীয়ান নেতার ষড়যন্ত্রের ইলতুৎমিসের কন্যা রাজিয়া এবং দুই পুত্র মামুদ শাহ ও বাহরাম পতন ঘটে। ১২৫৪ খ্রিস্টাব্দে বলবন সুলতানি শাসনের নায়েব-ই-মামলিকাৎ পদে আসীন হন। 

১২৬৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি জামাতা নাসিরুদ্দিনকে মাত্র 36 বছর বয়সে ২০ বিষ প্রয়োগে হত্যা করেন। ঐতিহাসিক ইসামির মতে এইভাবে বলবন দিল্লি সিংহাসনে বসেন। দিল্লি সুলতানদের মধ্যে গিয়াসুদ্দিনই সর্বপ্রথম রাজতন্ত্রের আদর্শের ব্যাপক ব্যাখ্যা করেন। কে. নিজামীর ভাষায়- তিনি চেয়েছিলেন রাজতন্ত্রকে একটি মহতী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে। বলবনের রাজতন্ত্রের আদর্শের মূল ভিত্তি ছিল পারসিক রাজতন্ত্রের আদর্শ।

বলবনের রাজত্ব তত্ত্ব


👉রাজার দৈবস্বত্ব

সুলতানি শাসনে সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবনের মতে দেশের রাজা হলেন লিবারৎ-ই-খুদাই বা স্বয়ং ঈশ্বরের প্রেরিত দূত। তিনি মনে করতেন সুলতানের সমস্ত ক্ষমতার উৎস হলো ঈশ্বর। তিনি মনে করতেন সুলতানের সমস্ত ক্ষমতার উৎস হলো ঈশ্বর। সুলতানের কোন সিদ্ধান্তের জন্য জনগণের সম্মতির প্রয়োজন নেই।


👉বাহ্যিক আড়ম্বর

সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন সর্বদাই সাধারণ প্রজাদের কাছ থেকে নিজেকে জড়িয়ে দূরে সরিয়ে রাখতেন। এমনকি দরবারে একমাত্র উজির বা প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত অন্য কেউ তার সঙ্গে কথা বলতে পারতো না। তিনি মানুষের বংশগত ব্যাপারে উচ্চ-নীচ ভেদাভেদ মেনে চলতেন। রাজার দৈহিক পবিত্রতায় তাঁর বিশ্বাস ছিল।


👉দরবারের মর্যাদা

সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবনের কাছে দরবারির মর্যাদা ছিল একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তিনি উপযুক্ত রাজ পোশাক পরিধান না করে ও আনুষঙ্গিক রাজকীয় জিনিসপত্র ব্যাতিরেকে এবং উন্মুক্ত তরবারি হস্তে সুসজ্জিত দেহলক্ষীদের দ্বারা পরিবৃত না হয়ে জনসম্মুখে বা দরবারে যেতেন না।


👉পারসিক নীতি অবলম্বন 

বলবনের রাজত্ব তত্ত্ব
সিজদা বা সিংহাসনের সামনে নতজানু হওয়া

তিনি পারস্যের সাসানীয় বংশের রাজাদের ন্যায় জিলিল্লাহ উপাধি নেন। এছাড়াও পাইবস বা সুলতানের পদযুগল চুম্বন করা এবং সিজদা বা সিংহাসনের সামনে নতজানু হওয়া- এই দুইটি নীতির প্রবর্তন করেন। তাঁর দরবারে হাসি, ঠাট্টা, আমোদ-আহ্লাদ, মদ্যপান নিষিদ্ধ ছিল। এক গুরুগম্ভীর পরিবেশের মধ্যে জাঁকজমকপূর্ণ পূর্ণ পোশাক পরে তিনি রাজসভায় আসতেন। আমির ওমরাহদের ক্ষমতা খর্ব করতে তিনি কঠোর মনোভাব নেন। 


👉ন্যায়বিচার

গিয়াসউদ্দিন বলবনের মতে প্রত্যেক সুলতানের একটি অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হলো প্রজাদের প্রতি ন্যায়বিচার করা। ব্যক্তিগত ক্রীতদাসদের প্রতি দুর্ব্যবহার করার জন্য বলবন উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীদের কঠোর শাস্তি দিতেও দ্বিধা করতেন না। প্রজাদের প্রতি অন্যায় ও অত্যাচারে দোষী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দিতেও দ্বিধা করতেন না।


📖 মূল্যায়ন 

তিনি শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য সেনা বিভাগে- "দেওয়ান-ই-আরজ" উপাধিধারী ইমাদ-উল-মূলক নিয়োগ করেন। তিনি উন্নত গুপ্তচর বিভাগ বা বাতিল গড়ে তোলেন। শাসন কার্যে তিনি সৎ লোকদের নিয়োগ করে এক উচ্চ আদর্শ তুলে ধরেছিলেন। তাই ড. ঈশ্বরী প্রসাদ "A short history of Muslim rule in india" গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন- বলবন এক মহান যোদ্ধা, শাসক ও রাষ্ট্রনীতিজ্ঞও ছিলেন


 

📖তথ্যসূত্র

  1. Poonam Dalal Dahiya, "Ancient and Medieval India".
  2. Upinder Singh, "A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century".

    📖সম্পর্কিত বিষয়

    সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন।

           ------------🙏---------------


    নবীনতর পূর্বতন
    👉 আমাদের WhatsApp Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
        
      
      👉 আমাদের WhatsApp Channel- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
    
        👉 আমাদের Facebook Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
      
      
        👉 আমাদের Facebook Page-ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
    
        👉আমাদের YouTube চ্যানেল - সাবস্ক্রাইব করুন 👍 
    
    
    
    
        
      
    
      
    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য

    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য


     


     




    
    

    👉নীচের ভিডিওটি ক্লিক করে জেনে নিন আমাদের ওয়েবসাইটের ইতিহাস এবং বিভিন্ন চাকুরী সম্পর্কিত পরিসেবাগুলি 📽️

    
    
    

    👉 জেনে আপনি আমাদের প্রয়োজনীয় পরিসেবা 📖

    👉ক্লিক করুন 🌐