মুঘল যুগে বস্ত্র বয়ন শিল্প

বস্ত্র বয়ন শিল্প ছিল মুঘল যুগের সর্ব বৃহৎ শিল্প| মোরল্যান্ড লিখেছেন যে, বস্ত্র বয়ন শিল্পে ভারত ছিল স্বনির্ভর| প্রচুর কার্পাস ভারতে উৎপন্ন হতো এবং সেই যুগে পৃথিবীতে ভারতের স্থান ছিল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ| দেশের প্রয়োজন মেটানোর জন্য এবং বিদেশে রপ্তানির জন্য কার্পাস বস্ত্র দেশে সর্বত্র উৎপন্ন হতো|

আবুল ফজল(আরো পড়ুন) সোনারগাঁয়ের মসলিন এবং বেনারস, আগ্রা, মালব, দাক্ষিণাত্য ও গুজরাটে তৈরি কার্পাসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন| বাংলা, দাক্ষিণাত্য ও গুজরাট ছিল বস্ত্র শিল্পের প্রধান কেন্দ্র| আবার ব্রোচ, কাশিম বাজার প্রভৃতি ছিল সুতো উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র|

মুঘল-যুগে-বস্ত্র-বয়ন-শিল্প

                    মুঘল সাম্রাজ্যের মানচিত্র

                Author- Santosh.mbahrm
               Date- 26 September 2015
             Source- wikipedia (check here)
 License- GNU Free Documentation License



বস্ত্র রঙ করার ব্যবস্থা একটি সহায়ক শিল্প হিসাবে গড়ে উঠেছিল এবং বস্ত্র রঙ করার জন্য পেশাদার লোক নিযুক্ত ছিল| মোরল্যান্ড জানিয়েছেন যে, ভারতে প্রায় 150 রকমের তাঁত বস্ত্র উৎপন্ন হতো| এর মধ্যে অতি মিহি মসলিন যেমন ছিল, তেমনি ছিল সাধারণ পরিদেহ মোটা বস্ত্র|

মুঘল-যুগে-বস্ত্র-বয়ন-শিল্প
বস্ত্র বুনন


সিন্ধু, গুজরাট, করমন্ডল উপকূল ও বাংলার বন্দর হয়ে এসব বস্ত্র বিদেশে রপ্তানি করা হতো| এসব বস্ত্রের বাজার ছিল আরব, মিশর, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, মালাক্কা, ব্রহ্মদেশ ও পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ| তবে মুঘল যুগে বস্ত্র বয়ন শিল্প বৃদ্ধি পেলেও এর বন্টন ব্যবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না|

লাহোর, মুলতান, গোলকুন্ডা এবং বুমহামপুরে উন্নতমানের বস্ত্র তৈরি হতো, কিন্তু পরিবহন ব্যবস্থায় অতিরিক্ত খরচা হওয়ার জন্য বস্ত্রের দাম ছিল প্রায় আকাশ ছোঁয়া| মানুষের পরিদেহ বস্ত্র ছাড়া রুমাল, পাগড়ী, সোনা-রুপা কাজ করার কাপড়, লেপ, বিছানা, তাবু ইত্যাদি তৈরি করা হতো|

বাংলা, গুজরাট ও কাশ্মীর ছিল রেশম শিল্পের প্রধান কেন্দ্র| রেশম বস্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের অর্ধেক ভারতে উৎপন্ন হত, আর বাকি অর্ধেক অংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো|

মুঘল-যুগে-বস্ত্র-বয়ন-শিল্প
রেশমগুটি


মানুচি, মানরিখ জানিয়েছেন- আগ্রা, ফতেপুর, লাহোর, পাটনা প্রভৃতি শহরে রেশম তৈরির প্রধান কেন্দ্র ছিল| ধর্মীয় সহিষ্ণুতার পূজারী আকবর রেশম শিল্পের প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখিয়ে ছিলেন| আবুল ফজল জানিয়েছেন- রেশম শিল্পের উন্নতির জন্য আকবর বিদেশ থেকে কারিগর নিয়ে আনতেন|

মুঘল ভারতে রেশম ও পশমে এক ধরনের মিশ্র বস্ত্র তৈরি করা হতো| আবুল ফজল জানিয়েছেন যে, আকবর নিজের কারখানায় নানা ধরনের পশমী বস্ত্র, লাল কার্পেট, কম্বল ইত্যাদি তৈরির ব্যবস্থা করেন| তবে ভারতীয় পশম খুব উন্নত মানের ছিল না| কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও রাজস্থান এই শিল্প গড়ে উঠে ছিল|

এই যুগে বয়ন শিল্পের মোট উৎপাদন কত ছিল, তা হিসাব করা যায় না| তবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, মুঘল যুগে বয়ন শিল্পের উন্নতি ঘটে ছিল এবং তার সঙ্গে উৎপাদন বেড়ে ছিল|

নতুন নতুন উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা এবং তার উন্নয়নের যে বিস্তার লাভ করে ছিল- তা আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে সহজে অনুমান করতে পারি এবং এই বিষয়ে আমাদের কোন সুন্দর থাকতে পারে না|



তথ্যসূত্র

  1. সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"
  2. শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "অষ্টাদশ শতকের মুঘল সংকট ও আধুনিক ইতিহাস চিন্তা"
  3. অনিরুদ্ধ রায়, "মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস"

    সম্পর্কিত বিষয়

    সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
                  ......................................................

    নবীনতর পূর্বতন
    👉 আমাদের WhatsApp Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
        
      
      👉 আমাদের WhatsApp Channel- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
    
        👉 আমাদের Facebook Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
      
      
        👉 আমাদের Facebook Page-ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
    
        👉আমাদের YouTube চ্যানেল - সাবস্ক্রাইব করুন 👍 
    
    
    
    
        
      
    
      
    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য

    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য


     


     




    
    

    👉নীচের ভিডিওটি ক্লিক করে জেনে নিন আমাদের ওয়েবসাইটের ইতিহাস এবং বিভিন্ন চাকুরী সম্পর্কিত পরিসেবাগুলি 📽️

    
    
    

    👉 জেনে আপনি আমাদের প্রয়োজনীয় পরিসেবা 📖

    👉ক্লিক করুন 🌐