সুলতান মুহাম্মদ ঘুরি

"ঘুর" রাজ্যটি প্রথমে গজনীর অধীনে ছিল, কিন্তু গজনীর দুরব্যবস্থা যুগে ঘুর রাজ্যটি শক্তি সঞ্চয় করে গজনীর সমকক্ষ ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরম্ভ করে। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা পরিণামে ঘুর রাজ্য জয়লাভ করে এবং রাজ্যে গিয়াসউদ্দিন মোহাম্মদ 1173 খ্রিস্টাব্দে গজনীর সিংহাসনে আরোহন করে। কিন্তু গিয়াসউদ্দিন তার ভাই মুইজউদ্দিনকে গজনীর শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। এই মুইজউদ্দিন ভারত তথা সুলতানি ইতিহাসে মুহাম্মদ ঘুরি নামে পরিচিত।

ভারতে তুর্কি সাফল্যের প্রভাব
সৈন্যবাহিনী


তার নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল ভারতের বিরুদ্ধে তুর্ক-আফগানদের সুপ্রসারিত অভিযান।

তার ভারত অভিযানের পিছনে কয়েকটি কারণ ছিল বলে ঐতিহাসিকরা মনে করেন, যথা-
  1. ভারতের যে অগাধ সম্পদ ছিল, তার লোভে সামলাতে না পেরে তিনি ভারত আক্রমণ করেছিলেন।
  2. প্রতিদ্বন্দ্বী খারাজিম সাম্রাজ্যে সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে নিজ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তিনি হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে ভারত ভূখণ্ড দখলের কর্মসূচি নেন।
  3. অনেক ঐতিহাসিক বলেন ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য তিনি ভারত আক্রমণ করেন।
  4. উত্তর ভারতের রাজনৈতিক বিষণ্ণতা ও কেন্দ্রীয় শক্তির অভাব তাকে ভারত আক্রমণের উৎসাহ জোগায়।
  5. উত্তর ভারতে রাজপুত শক্তিগুলির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তাকে ভারত অভিযানে উৎসাহ করে।

1175 খ্রিস্টাব্দে গোমাল গিরিপথ দিয়ে সর্বপ্রথম বিধর্মী মুসলমানদের বিরুদ্ধে অভিযান করেন এবং সুকৌশলে অবলম্বন করে দূর্গ সহ নিজের জয় সুনিশ্চিত করে। এর অল্পকাল পরে 1178 খ্রিস্টাব্দে ঘুরি গুজরাট আক্রমণ করতে গিয়ে বীমদেবের হাতে পরাজিত হয় কোন ক্রমে প্রাণ নিয়ে স্বরাজ্যে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। 1179 খ্রিস্টাব্দে পেশোয়া তার দখলে আসে। এরপর পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ঘুরি শিয়ালকোট পর্যন্ত অগ্রসর হন। পরবর্তীকালে তিনি দেল্লী ও গাঙ্গেয় দোয়াব অঞ্চলে অগ্রসর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে চৌয়ান রাজ পৃথ্বীরাজের সঙ্গে তার এক বিরাট যুদ্ধ হয়। রাজপুত বাহিনী মুসলমানদের ভীষণভাবে বিধ্বস্ত করে। ঘুরি কোনোক্রমে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যান। খুুুুব সম্ভবত এই যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী যেভাবে পরাজয় হয়েছিল, ইতিপূর্বে কোনদিন মুসলিম বাহিনী এতটা বিধ্বস্ত হয়নি।

কিন্তু তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে মোহাম্মদ ঘুরি পরাজিত হয়ে ও নিরুৎসাহী না হয়ে এক বছর ধরে সৈন্য সংগ্রহ করেন এবং 1192 খ্রিস্টাব্দে পৃথ্বীরাজকে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে পরাজিত করেন। মোহাম্মদ ঘুরি যুদ্ধের পরেই পৃথ্বীরাজ এবং তার ভাইকে নরকে পাঠিয়ে দেন।

তবে যাইহোক পরিশেষে বলা যায় যে, তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ ভারতের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই যুদ্ধের পরেই বলা যায়, ভারতে অভ্যন্তরে মুসলিম আধিপত্য সূচনা হয়েছিল। আফগানিস্তান ঘুর রাজ্যটিকে তিনি উত্তর ভারতীয় সমাজে পরিণত করেন এবং 1266 খ্রিস্টাব্দে তিনি পরলোকগমন করেন।



তথ্যসূত্র

  1. Poonam Dalal Dahiya, "Ancient and Medieval India"
  2. Upinder Singh, "A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century"

    সম্পর্কিত বিষয়

    সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|

                         -----------------------------


    নবীনতর পূর্বতন
    👉 আমাদের WhatsApp Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
        
      
      👉 আমাদের WhatsApp Channel- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
    
        👉 আমাদের Facebook Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
      
      
        👉 আমাদের Facebook Page-ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
    
        👉আমাদের YouTube চ্যানেল - সাবস্ক্রাইব করুন 👍 
    
    
    
    
        
      
    
      
    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য

    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য


     


     




    
    

    👉নীচের ভিডিওটি ক্লিক করে জেনে নিন আমাদের ওয়েবসাইটের ইতিহাস এবং বিভিন্ন চাকুরী সম্পর্কিত পরিসেবাগুলি 📽️

    
    
    

    👉 জেনে আপনি আমাদের প্রয়োজনীয় পরিসেবা 📖

    👉ক্লিক করুন 🌐