একদল ঐতিহাসিক গুপ্তযুগকে হিন্দুধর্ম ও হিন্দু সংস্কৃতির নবজাগরণের যুগ বলে অভিহিত করেছেন। ইউরোপের ইতিহাসে রেনেসাঁস বলতে গ্রিক সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞানের আলোচনাটিকে বুঝায়।
গুপ্ত যুগকে যারা নবজাগরণ বলতে চেয়েছেন তাদের যুক্তি হলো-
- বৈদিক যুগ থেকে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের শাসন কাল পর্যন্ত হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃতির অভাবনীয় বিকাশ ঘটেছিল।
- অশোকের সময় থেকে সংস্কৃত ভাষার পরিবর্তে বিভিন্ন ভাষার(প্রাকিক) প্রচলন শুরু হলেও বৈদিক ধর্মের প্রধান বাহন সংস্কৃত ভাষা ম্লান হয়ে পড়ে।
কিন্তু অনেকের মতে উপরিক্ত মতবাদগুলি যুক্তিসঙ্গত নয় কারণ-
প্রথমত:
অশোকের রাজত্বকালে বৌদ্ধ ধর্ম রাষ্ট্রীয় তথা বিশ্ব ধর্মে পরিণত হওয়ার বিশ্ব সত্য ছিলো, তাহলে এটা স্বীকার করা যায় না হিন্দুধর্ম ম্লান হয়ে পড়েছিল। তবে গুপ্ত যুগে যে হিন্দু ধর্মের পুনরুত্থান ঘটেছিল এই কথা বাস্তব সত্য।
দ্বিতীয়তঃ
শুধুমাত্র ধর্মক্ষেত্রেই নয়, এই সকল সম্রাটরা সংস্কৃত ভাষার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, অশোকের আমলে হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃত ভাষার কিছুটা অবনতি হলেও গুপ্তযুগে সেই ভাষা ও ধর্ম তার নিজস্ব জীবনের গতিশীলতা ফিরিয়ে পেয়েছিল। ইতিহাস পাঠক হিসাবে আমরা একথা জোরের সঙ্গে বলতে পারি যে, হিন্দু ধর্ম বা সংস্কৃত চর্চার বিলোপ ঘটেনি।
তথ্যসূত্র
- সুনীল চট্টোপাধ্যায় "প্রাচীন ভারতের ইতিহাস"
- Upinder Singh, "A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century".
সম্পর্কিত বিষয়
- রেনেসাঁ ও মানবতাবাদ (আরো পড়ুন)
- ঋক বৈদিক যুগ এবং পরবর্তী বৈদিক যুগের ধর্মীয় ভাবনা (আরো পড়ুন)
- বৈদিক এবং ঋক বৈদিক যুগে প্রশাসনিক ব্যবস্থা (আরো পড়ুন)
- প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
.......................................