👉ভূমিকা:-
প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে চীনে ছাত্র ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় নতুন প্রগতিশীল আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। তারা বুঝতে পারেন সাম্রাজ্যবাদী ও সমাজতান্ত্রিক শোষনের অবসান না ঘটলে চীনের প্রকৃত মুক্তি হবে না। এই চেতনা থেকেই নতুন গণতন্ত্রের আদর্শে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে 4 ঠা মে আন্দোলন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধকাল |
👉এক নায়ক তন্ত্র:-
১৯১২ খ্রিস্টাব্দে সান ইয়াৎ সেন গৃহযুদ্ধ এরাতে ইউয়ান-সি-কাই কে রাষ্ট্রপতিপদ ছেড়ে দেন। আর তিনি রাষ্ট্রপতি হয়ে চীনে একনায়ক তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন ও প্রজাতন্ত্র ধ্বংস করেন তিনি কুয়ো-মিন-তাং দলের কয়েকজন নেতাকে হত্যা করেন। তাই চীনা বাসির মনে হতাশা সৃষ্টি হয়।
কুয়ো-মিন-তাং দলের পতাকার প্রতীক |
👉বৈদেশিক প্রভাব:-
চিনি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিদেশীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তাদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির চীনের শিল্প ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করত। বিদেশীরা প্রচুর কাঁচামাল রপ্তানি করায় চীনে ভারী শিল্প বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
👉পাশ্চাত্য দেশের শাসন:-
উনিশ শতকে শেষে ব্রিটেন জার্মানি ফ্রান্স ও রাশিয়ার চীনে উপনিবেশিক শোষণ চালায় আবার বিংশ শতকে যোগ দেয় জাপান। বিপ্লবের পর সোভিয়েত, রাশিয়া ও জার্মানি চীন থেকে সরে যায়। কিন্তু ফ্রান্স, ব্রিটেন, আমেরিকা ও জাপানের সাম্রাজ্যবাদী শোষণের শিকার হয় চিন।
👉জাতীয় শিল্পীর উদ্যোগ:-
১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর চীনে জাতীয় শিল্পে জাগরণ দেখা দেয়। তারা ঔপনিবেশিক শক্তিগুলির সহযোগিতায় জাতীয় শিল্পও উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
👉রাজনৈতিক সচেতনতা:-
সাম্রাজ্যবাদী শোষণে চীনের দুরবস্থা সম্পর্কে কৃষক শ্রমিক ও বণিক গোষ্ঠী রাজনৈতিক সচেতন হয়ে ওঠে। শ্রমিকেরা বিদেশি শোষণের বিরুদ্ধে সচ্চার হন। পাশাপাশি শিক্ষিত সম্প্রদায় সামাজিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে।
👉পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাব:-
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় |
চিনির পরিবর্তনকে সংগ্রামমুখী জাতীয়তাবাদের পরিণত করতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিল পাশ্চাত্য শিক্ষাই প্রভাবিত ছাত্র ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের আজও ছাত্রদের স্বাধীন মতামত ও বুদ্ধিবাদে গুরুত্ব দেন। বুদ্ধিজীবীদের রচনা প্রকাশিত হয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়।
✍️চীনের ৪ঠা মে আন্দোলনের ফলাফল
৪মে আন্দোলন কর্মকাণ্ডের ব্যাপকতা ও গভীরতার বিচার চীনের ইতিহাসে এক নজির বিহীন ঘটান। চীনের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন এই আন্দোলনের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
👉দেশাত্মবোধ ও আনুধিকার উদ্ভব:- ৪ ঠা মে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চীনে আধুনিকতা, দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধের সূচনা হয় এই আন্দোলন চীনে নবজাগরণের পথ সুগম করে।
👉সরকারের নতি স্বীকার:- ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের চাপে চীন সরকার নতি স্বীকার বৃদ্ধি হয়। আন্দোলনের চাপ সরকার বৃদ্ধি হয়ে ধ্রুত ছাত্রদের ছেড়ে দেয়। ভার্সাই সন্ধিপথে স্বাক্ষর করবে না বলে ঘোষণা করেন।
👉কমিউনিষ্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা:- এই আন্দোলনের ফলেই চীনে কুয়ো-মিন-তাং দলের পূর্ণ গঠন হয়। এবং কমিউনিস্ট পার্টির উন্ঠান ঘটে। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চীনের শ্রমিক শ্রেণী রাজনৈতিক সংগ্রামের দিকে এগিয়ে যায়।
👉ব্যাপকতা:- ৪ঠা মে আন্দোলনের প্রভাব ছিল চীনের সর্বত্র এবং এর গণভিত্তি ছিল ব্যাপক।
👉সাংস্কৃতিক অগ্রগতি:- চীনের বুদ্ধিজীবীদের কাছে এই আন্দোলনে এক নতুন যুগের সূচনা করে। চীনে বহু বই পত্র ও পত্র পত্রিকা প্রকাশিত হলে সাংস্কৃতিক অগ্রগতি ঘটে। চীনে নতুন সংস্কৃতিকে সবাই স্বাগত জানাই।
👉ঐতিহাসিক মতামত:- চীনা ঐতিহাসিক হো-কান-চি এর মতে, "৪ঠা মে এর আন্দোলন নতুন বিপ্লবী ঝড়ের জন্মদেন এবং চীনের বিপ্লবকে এক নতুন স্তরে পৌঁছে দেই"।
✍️মূল্যায়ন:-
পরিশেষে বলা যায় যে, ৪ঠা মে আন্দোলনের মাধ্যমে চীনের জাতীয় ও শ্রেণী স্বার্থে প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়। আধুনিক চীনের ইতিহাস ৪ঠা মে আন্দোলন ছিল এক উল্লেখযোগ্য দিক বিন্দু। পরবর্তীকালে রাজনৈতিক ইতিহাসের গতিধারা এই আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দেশিত হয়েছিল।
............. সমাপ্তি...........
✍️লেখিকা পরিচিতি
👉 তথ্যসূত্র
- অমিত ভট্টাচার্য, "চীনের রূপান্তরের ইতিহাস 1840-1969"
- Jonathan Fenby, "The Penguin History of Modern China".
✍️সম্পর্কিত বিষয়
✍️সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন🙏।